প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১০:১৪ এএম
আধুনিক কর্মজীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো চাপ (Stress)। নির্দিষ্ট সময়সীমা, টার্গেট পূরণ, দীর্ঘ সময় কাজ, অফিস রাজনীতি কিংবা আর্থিক অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে কর্মীরা প্রায়ই মানসিক চাপে ভোগেন। দীর্ঘস্থায়ী চাপ শারীরিক অসুস্থতা, অনুপ্রেরণার অভাব এবং কর্মদক্ষতা হ্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই অফিসে মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং জরুরি প্রয়োজন।
চাপের সাধারণ কারণ
- কাজের অতিরিক্ত চাপ ও সময়সীমার চাপ
- সহকর্মী বা বসের সঙ্গে মতবিরোধ
- ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা
- কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্যের অভাব
চাপ সামলানোর কার্যকর উপায়
- সময় ব্যবস্থাপনা: অগ্রাধিকারভিত্তিক কাজ সাজানো এবং ছোট ছোট ধাপে সম্পন্ন করা।
- ছোট বিরতি নেওয়া: দীর্ঘ সময় কাজের মাঝে অল্প সময় বিশ্রাম মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে।
- শারীরিক সচেতনতা: নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার চাপ কমাতে সহায়তা করে।
- খোলামেলা আলোচনা: সহকর্মী বা ম্যানেজারের সঙ্গে সমস্যার কথা শেয়ার করলে সমাধান সহজ হয়।
- মাইন্ডফুলনেস ও মেডিটেশন: কয়েক মিনিটের ধ্যান বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন মানসিক প্রশান্তি আনে।
প্রতিষ্ঠানের করণীয়
- কর্মীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মশালা আয়োজন।
- কাজের সময় ও টার্গেট নির্ধারণে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা।
- হেল্পলাইন বা কাউন্সেলিং সুবিধা চালু করা।
- কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রাখতে ফ্লেক্সিবল ওয়ার্ক আওয়ার্স দেওয়া।
ইসলামের আলোকে মানসিক শান্তি
কুরআনে আল্লাহ বলেন: “স্মরণ রেখো, আল্লাহর স্মরণেই অন্তরগুলো শান্তি লাভ করে।” (সূরা রা’দ: ২৮)। অর্থাৎ চাপমুক্ত হতে হলে আত্মাকে প্রশান্ত রাখা জরুরি। নামাজ, দোয়া ও জিকির কর্মজীবী মানুষের মানসিক শক্তি জোগায় এবং চাপ কমাতে সহায়তা করে।
অফিসের চাপ পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব নয়, তবে সঠিক ব্যবস্থাপনায় তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সময় ব্যবস্থাপনা, সুস্থ জীবনধারা এবং মানসিক শান্তির অনুশীলন একজন কর্মীকে শুধু চাপমুক্তই করে না, বরং তার কর্মদক্ষতা ও সুখী জীবনও নিশ্চিত করে।
তাই বলা যায়—চাপকে সমস্যা নয়, বরং সঠিকভাবে সামলানোই প্রকৃত দক্ষতা।