প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
একটি মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নিত্যনতুন অপ্রাসঙ্গিক দাবি উত্থাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই সংকট তৈরি হতো না, কারণ সুযোগ পেলেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা নিয়ে নেয়।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু রাজনৈতিক মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করতে নিত্যনতুন দাবি তুলছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির মতো এমন সব বিষয় আনছে, যা এদেশের সাধারণ মানুষ চেনেও না, বোঝেও না। কাকে ভোট দিলো, কে নির্বাচিত হলো, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে।’
গণঅভ্যুত্থানের পরপরই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতা পরিবর্তনের সাত-আট দিন পরেই বলেছিলাম, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিন। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। আমরা দেখেছি, যখনই একটি পরিবর্তন আসে, তার সুযোগ অন্যরা নিয়ে নেয়। যত দেরি হয়, অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানের সুযোগ তত বেড়ে যায়।’
মির্জা ফখরুল ২০০৭ সালের এক-এগারোর উদাহরণ টেনে বলেন, ‘তখন দুই বছর দেরি করে নির্বাচন দেওয়ার ফলে ফ্যাসিস্টদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছিল, যার ভোগান্তি আমাদের ১৬ বছর পোহাতে হয়েছে।’
এ সময় বিএনপির মহাসচিব সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সংকটকালে উঠে দাঁড়াতে জানে। ফিনিক্স পাখির মতো বাংলাদেশ বারবার জেগে ওঠে।’
তিনি মওলানা ভাসানী, জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি এবং দেশকে রক্ষা করি।’
আলোচনায় মির্জা ফখরুল কাজী জাফর আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি ছিলেন কিংবদন্তিতুল্য ছাত্রনেতা। তার বক্তৃতা শুনে মানুষ বিমোহিত হতো।’
কাজী জাফরের রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি যখন স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, আমরা কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু অন্তরের অন্তরে তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক বিপ্লবী, দেশপ্রেমিক এবং গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ।’