বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫
সফলতার চাবিকাঠি

কার্যকর ডেইলি রুটিনে বদলে যাবে শিক্ষার্থীর জীবন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

কার্যকর ডেইলি রুটিনে বদলে যাবে শিক্ষার্থীর জীবন

শিক্ষার্থীদের বড় অংশই প্রতিদিন একই সমস্যার মুখোমুখি হয়—কীভাবে পড়াশোনার জন্য একটি কার্যকর রুটিন তৈরি করা যায়? অনেকেই হঠাৎ বড় পরিবর্তন আনতে গিয়ে ব্যর্থ হন। যেমন কেউ যদি হঠাৎ সাতটার বদলে ভোর চারটায় ওঠার সিদ্ধান্ত নেন, মস্তিষ্ক তা সহজে মেনে নিতে পারে না। তাই রুটিন তৈরি করতে হলে প্রয়োজন ছোট ছোট ধাপ এবং ধারাবাহিকতা।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টপাররা এক মাস বা দুই মাসে তৈরি হয় না। তারা প্রতিদিনের ছোট ছোট অ্যাকশনগুলোর মাধ্যমে এক বছরের যাত্রা গড়ে তোলে। প্রতিদিন মাত্র তিন ঘণ্টা পড়াশোনার অভ্যাসও বছরের শেষে চমকপ্রদ সাফল্য এনে দিতে পারে। অন্যদিকে যারা হঠাৎ আট-দশ ঘণ্টা পড়াশোনার পরিকল্পনা করে, তারা টিকতে পারে না।

একটি ডেইলি রুটিন আসলে শিক্ষার্থীকে প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে মনোযোগী করে। শুরুতে খুব বড় পরিবর্তনের দরকার নেই। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ সকাল সাতটায় ঘুম থেকে ওঠেন, তবে প্রথম দিন সাড়ে ছয়টায় ওঠার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন দশ মিনিট করে সময় এগিয়ে আনলে আঠারো দিনের মধ্যেই ভোর চারটায় ওঠা সম্ভব হবে। এতে শরীর ও মস্তিষ্ক কোনো ধাক্কা খাবে না, বরং ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে উঠবে।

একই নিয়ম পড়াশোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আগে সকালে পড়াশোনার অভ্যাস না থাকলে প্রথমে ১৫ মিনিট দিয়ে শুরু করুন, পরে ধীরে ধীরে সময় বাড়ান। একবার রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে গেলে সকালে এক ঘণ্টা পড়াশোনা দিনের অন্য সময়ের দুই ঘণ্টার সমান ফলপ্রসূ হবে।

রুটিন তৈরিতে শারীরিক অনুশীলন, পর্যাপ্ত পানি পান, সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণকেও গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সংযম, স্বল্প সময়ের এক্সারসাইজ ও নিয়মিত বিরতিও শিক্ষার্থীর এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

অভ্যাস তৈরি হলে প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা সময় বের করতে হবে। কঠিন বিষয়গুলো সকালে, আর তুলনামূলক সহজ বিষয়গুলো বিকেল বা সন্ধ্যায় রাখা যেতে পারে। এভাবে প্রতিটি বিষয়ে সুষম সময় বরাদ্দ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞরা শ্রেণিভেদে পড়াশোনার সময়ও নির্ধারণ করেছেন—প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি: প্রতিদিন দুই ঘণ্টা, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি: তিন থেকে চার ঘণ্টা, নবম-দশম শ্রেণি: চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা, আর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি: পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।

একটি কার্যকর কৌশল হলো স্টপওয়াচ ব্যবহার করা। প্রতিদিন পড়াশোনার শুরুতে এটি চালু করলে বোঝা যাবে কতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে পড়া সম্ভব হয়েছে এবং ধীরে ধীরে সময় কীভাবে বাড়ছে। এই ছোট ছোট জয়ই শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাসকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।

সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—রুটিন বানানো মানে নিজের কাছে পরিষ্কারভাবে জানা যে কোন কাজটি কখন করতে হবে। একজন শিক্ষার্থীর মূল পরিচয় হলো পড়াশোনা, আর সে পরিচয় গড়তে হলে রুটিনকে বন্ধু বানাতে হবে। প্রতিদিনের ছোট ছোট পরিবর্তন একদিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাবে তার কাঙ্ক্ষিত পরিচয়ে, যেখানে সে নিজেকে দেখতে চায়।

মাতৃভূমির খবর

Link copied!