প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ১০:২২ পিএম
নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল বউবাজার এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের চার বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দাবিরন গ্রামের হাবিবুল্লাহ শিপলু (৩৫), তার স্ত্রী মোহিনী আক্তার মীম (২৫) এবং তাদের চার বছরের শিশু ছেলে আফরান। নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল বউবাজার এলাকার একটি সাততলা ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকত তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পান সদর মডেল থানা পুলিশ। পরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামাল উদ্দিন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তারা দেখলেন, বাসার দরজা ভেতর থেকে লক করা। পরে নিহতদের স্বজন এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। ভেতরে প্রবেশের পর শিপলুকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। অন্য একটি কক্ষে তার স্ত্রী এবং ছেলে আফরানকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের দুজনের মুখের ওপর বালিশ চাপা ছিল।
হাবিবুল্লার বড় ভাই মো. লাভলু বলেন, ‘সোমবার সারা দিন ভাইয়ের খবর পাচ্ছিলাম না। পরে তার বাসায় যাই। দরজা না খোলায় পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। বিছানায় পড়ে ছিল ভাবি ও ভাতিজার মরদেহ। আমার ভাই ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল। তার কিছু ঋণ ছিল। তবে কত টাকা, সেটা জানি না।’
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হাবিবুল্লাহ শিপলু প্রথমে স্ত্রী এবং সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
তিনি বলেন, নিহত শিপলু ‘রমজান সমিতি’ নামে একটি সমিতির ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। করোনা মহামারির সময় সমিতিটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সমিতির মালিক গ্রাহকের জমা রাখা টাকার বড় অঙ্ক আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর গ্রাহকরা সমিতির মালিক এবং শিপলুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে শিপলু প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই হতাশা থেকেই তিনি এমন চরম পদক্ষেপ নেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা সবদিক থেকে তদন্ত করছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।