প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ১১:২০ এএম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম জন্মবার্ষিকী। আজ ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির জন্মদিন। ১৯৭৮ সালের আজকের এই দিনে জাতীয় ইতিহাসের এক ক্রান্তিলগ্নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পটভূমিতে এই দল প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজধানীর ঢাকার রমনা গ্রিনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এই দলটির কেন্দ্রীয় কাঠামো ঘোষণা করেন। দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি নিজেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে গতকাল রবিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়েছে। এ সভায় দলটির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য নিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছাড়াও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা আলোচনা করেছেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আজ ১ সেপ্টেম্বর সকাল ছয়টায় বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। একই দিন বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ করা হবে। জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এতে অংশ নেবেন বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির জাতীয় ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা।
এদিন দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি হবে। ২ সেপ্টেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা ও পৌরসভায় সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। প্রকাশ করা হবে পোস্টার। সমসাময়িক প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিএনপির উদ্যোগে গোলটেবিল বৈঠক করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে ঢাকাসহ দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ অভিযান, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়ানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৪৭ বছরে অনেক উত্থান-পতন, নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পরিশীলিত ও অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ এই দলটি এখন স্থিতধী হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন রূপে। যখনি দেশে কোনো সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে তখনি বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির পক্ষেই তাদের অকুণ্ঠ রায় প্রদান করেছে। শত শহীদের রক্তে রঞ্জিত পথ বেয়ে বিএনপিকে অগ্রসর হতে হয়েছে জাতীয়তাবাদী একটি দল হিসেবে। ভেতর-বাইরে নানা চক্রান্ত ও ফাঁদে বিএনপিকে পর্যুদস্ত করার বহু অপচেষ্টা দলটিকে অতিক্রম করতে হয়েছে। জুলুম, নির্যাতন, গুম, খুন, অপহরণ বহু নির্যাতনের শিকার এই দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক পর্যন্ত অনেকে।
বহুদলীয় গণতন্ত্র এই দলের মূলমন্ত্র। দলটিকে বারবারই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সফল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। উন্নয়ন, উৎপাদনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী এই দল শান্তি, সংগ্রামে, সংকটে সব সময়ই অটল থাকার চেষ্টা করেছে। ১৯ দফা এই দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। সময়ের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন সময়ে এই কর্মসূচির সময়োপযোগী আধুনিকায়ন করেছে দলটি। এই দলই বাংলাদেশের জনগণের স্বতন্ত্র মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত পরিচয় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ দর্শনের প্রবক্তা। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা ধারণ করে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিএনপি এবার তার ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী নানামুখী কর্মসূচির পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে সাত দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।