প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৯:৪২ এএম
গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও খাদ্য অবরোধে বুধবার (২০ আগস্ট) ভোর থেকে অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনার প্রথম ধাপের অভিযান শুরু করেছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষ সেখানে অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আটকে রয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার ক্ষুধাজনিত কারণে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৯ জনে, যাদের মধ্যে শিশুই রয়েছে ১১২ জন।
ইসরায়েলি হামলার মধ্যে দক্ষিণ গাজায় বাস্তুচ্যুতদের একটি তাবুতে বোমা হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ফিলিস্তিনের সাবেক জাতীয় বাস্কেটবল খেলোয়াড় মোহাম্মদ শালান ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনি খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রের সামনে ছিলেন। বুধবারই খাদ্যসাহায্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
নতুন বাস্তুচ্যুতির শঙ্কা
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনায় তারা আগামী সপ্তাহগুলোতে ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা ডেকে পাঠাবে। তাদের ট্যাংক এরই মধ্যে শহরের কেন্দ্রীয় অংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেছেন, গাজা সিটির এই অভিযান নতুন করে ‘বৃহৎ সংখ্যক মানুষের বাস্তুচ্যুতি’ ঘটাবে, যারা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বহুবার ঘরছাড়া হয়েছেন।
আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, গাজার জেইতুন ও উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলা আরও তীব্র হয়েছে। ‘এটি ঘরবাড়ি ধ্বংস করে গাজা উপত্যকাকে ফাঁকা করার কৌশল,’ বলেন তিনি।
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অগ্রাহ্য
গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের স্বজনরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলেছে, সরকার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অগ্রাহ্য করছে। তারা একে ‘ইসরায়েলি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা প্রমাণ করে যে তারা ‘নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংস যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে’ এবং শহর ধ্বংস করে মানুষকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।
ভয়াবহ মানবিক সংকট
সেভ দ্য চিলড্রেনের আঞ্চলিক পরিচালক আহমেদ আলহেনদাওয়ি বলেছেন, গাজায় যা ঘটছে তা শিশু, পরিবার ও একটি পুরো প্রজন্মের জন্য এক মহাপ্রলয়। তাদের দুর্দশা ভাষায় প্রকাশের ঊর্ধ্বে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৬২ হাজার ১২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক মানুষ।