প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৯:৫২ পিএম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গত ১ বছর ছাড় দিয়েছি। ছাড় দিতে দিতে আমরা শেষ পর্যায়ে এসেছি। আমরা এবার আর ছাড় দেব না। জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এক পার্সেন্ট ছাড় দেওয়া হবে না। যে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা জনগণের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে এবং বন্দোবস্তের কথা আমরা বলেছি, সেই জুলাই সনদে আমরা এক বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেব না। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি (জুলাই সনদ) আদায় না করে সরকার যেতে পারবে না। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫’ এ এ কথা বলেন তিনি। এনসিপির যুব উইং জাতীয় যুবশক্তি সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় যুব ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচন, ভোটাধিকার, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের লড়াই ছিল। আমরা এও বলেছি, পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে যেতে হবে। আমাদের এই মুহূর্তের বড় সংকট হলো, স্থিতিশীলতা এবং রাজনৈতিক ঐক্য ধরে রাখা। যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্য ধরে না রাখে এবং ছাড় দেওয়ার মানসিকতা না থাকে, তাহলে আরেকটা এক-এগারো আসবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বসে করতে হবে। সেই সংস্কৃতি বাংলাদেশ কায়েম করতে হবে। ব্যর্থ হবে অরাজনৈতিক শক্তি, বিদেশি শক্তি।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, একাত্তরের পরে কীভাবে রক্ষীবাহিনী দিয়ে, বাকশাল তৈরি করে কীভাবে লুটপাট করা হয়েছিল। ৯০ এর পরেও দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। কী হয়েছিল তা আমরা দেখেছি। ২৪ এর অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিতে, ২৪ এর অভ্যুথানের প্রজন্মকে প্রতারিত করতে সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। সমীকরণ এখনো শেষ হয়নি, যারা সমীকরণ মিলিয়ে ফেলছে তারা ভুল পথে হাঁটছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়েছে, ফলে অনেক ধরনের হিসাব-নিকাশ আমরা করছি। এক বছর আমরা কী পেলাম, তরুণরা কী পেল, দেশে কী কী পরিবর্তন হলো? গণঅভ্যুত্থানের এক বছরেও নতুন বাংলাদেশ আমরা পাইনি। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। যে নতুন বন্দোবস্তের জন্য লড়াই করেছি, জীবন দিয়েছি এবং জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, সেই নতুন বন্দোবস্ত আমরা পাইনি। এজন্য বলছি, জলাই গণঅভ্যুত্থান শেষ হয়নি। লড়াই শেষ হয়নি।
তরুণদের রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, তরুণরা রাজনীতি করতো না। জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণরা বিবেকের তাড়নায় অংশ নিয়েছে। তারা স্বপ্ন দেখেছে। তরুণদের এই স্বপ্ন ভঙ্গ হলে, যাদের জন্য হবে তাদের তরুণরা কোনোদিনও ক্ষমা করবে না। সেই স্বপ্ন আমরা ভঙ্গ হতে দেব না। জুলাই এর প্রজন্মকে প্রতারিত হতে দেব না।
তিনি বলেন, আমাদের নিয়ে যত ষড়যন্ত্র ও মিডিয়া ট্রায়াল করা হোক না কেন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় জুলাই প্রজন্মকে ক্ষমতায়িত করতে রাজপথে আমরা লড়াই করে যাব।
তরুণদের ক্ষমতায়ন করার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, তরুণদের ক্ষমতায়িত করতে হবে। এর মানে এই নয় যে, এনসিপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের তরুণরা রাজপথে নেমেছিল। তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। আমাদেরকে সন্মান না দেন আপনার দলের তরুণদের সন্মান দেন। তরুণদের রাজনৈতিক দলগুলোর নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে স্থান দিতে হবে। আগামীর নির্বাচনে, সংসদে এবং গণপরিষদে তরুণদের সর্বাধিক অংশ গ্রহণ দেখতে চাই। সব রাজনৈতিক দলকে এটা কমিটমেন্ট করতে হবে।