প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
কারও কারও আচরণে পলাতক স্বৈরাচারের মতো ‘বিএনপি ঠেকানোর’ অপরাজনীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার ( ২১ আগস্ট) বিকেলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের জনগণ কংশরূপী এক ফ্যাসিস্টের দুঃশাসন, অত্যাচার ও নির্যাতন দেখেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে এবং এখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে। তবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই পথ ঝুঁকিমুক্ত নয়।
তারেক রহমান বলেন, বর্তমানে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু আমরা খেয়াল করে দেখছি, এই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে কোন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য, মন্তব্য কিংবা নিত্যনতুন শর্ত বা শর্তের প্রস্তাবনা সামগ্রিকভাবে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য ও শর্ত জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বিএনপিকে ঠেকাতে পলাতক স্বৈরাচার যেভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল, এখন সেই একই ধরনের ‘বিএনপি ঠেকানোর’ অপরাজনীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যারা মনে করছেন জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে এবং এই ভয়ে বিভিন্ন কৌশল বা শর্তের আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদের রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করা উচিত। জনগণের শক্তির ওপর আস্থা রাখুন। জনগণের রায় প্রদানের পথ রুদ্ধ করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই হয়ত নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি রয়েছে। তবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, ভৌগোলিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য এখনো উপযোগী নয়।
তারেক রহমান বলেন, এই পদ্ধতিতে জনগণ কাকে ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করছে, তা পরিষ্কারভাবে জানার সুযোগ থাকে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পিআর পদ্ধতিসহ অন্যান্য ইস্যুতে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতবিরোধ আছে, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাধান হয়ে যাবে। এই ধরনের ভিন্ন মত গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি আমরা গণতন্ত্রের পথে শর্তের পর শর্ত আরোপ করতে থাকি, তাহলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে এবং পরাজিত স্বৈরাচার পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে।
তিনি বলেন, ধর্মীয় পরিচয়কে কেউ যাতে নিজেদের হীন ও দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে আপনাদের সকলকে সতর্ক থাকার বিনীত আহ্বান জানাই। অতীতে বিভিন্ন সময় দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থাপনা ও বাসাবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাগুলো দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশই কোনো ধর্মীয় কারণে হয়নি। বরং অধিকাংশ ঘটনার নেপথ্য ছিল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অথবা অবৈধ লোভ-লাভের আশা।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, দল মত ধর্ম দর্শন যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার।