প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম
ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামি আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার অডিও প্রচার করা ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে এর পর থেকে কেউ তার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে দেশের গণমাধ্যমগুলোকে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন আউটলেটগুলোতে ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার অডিও সম্প্রচার এবং প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। তাছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাক্তন স্বৈরশাসকের ঘৃণা ছড়ায় এমন বক্তব্য সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে।
আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে কিছু গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের একটি ভাষণ প্রচার করেছে যেখানে তিনি মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এ ধরনের অপরাধমূলক প্রচারকর্মে জড়িত গণমাধ্যমের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি এবং দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতির ইতিহাসের এ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বিভ্রান্তি সৃষ্টির ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। শেখ হাসিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগের মুখে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তিনি বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বিচারাধীন। পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী তাদের নেতাদের বক্তব্য প্রচার বা সম্প্রচার করাও অপরাধ। যে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন যারা তাদের (আওয়ামী লীগ) নেতাদের কার্যকলাপ বা বক্তৃতা প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক অখণ্ডতার ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রথমবারের মতো সত্যিকারের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার অডিও এবং তার বক্তৃতা, যা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি তা প্রচার করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলোর সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাই। শেখ হাসিনার যে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার বা পুনঃপ্রচার গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করে। এটি কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কাজ করে। এ ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অমান্যকারী যেকোনো সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের আইনের অধীনে আইনি জবাবদিহিতার আওতায় পড়বে।