প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০২:৪৩ পিএম
গাজা–ইসরায়েল যুদ্ধ এখন এক অশেষ দুঃস্বপ্নের নাম। প্রতিদিন বোমাবর্ষণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে লাশ, শোকাহত শিশুদের আর্তনাদ—সবকিছু মিলিয়ে যেন বিশ্বের চোখে এটি এক স্বাভাবিক দৃশ্য হয়ে উঠছে। অথচ যুদ্ধ থামছে না। ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া প্রতিরক্ষা নয়, প্রতিশোধের রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিশোধের এই আগুনে পুড়ে যাচ্ছে নিরীহ মানুষ। শিশুদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হচ্ছে, হাজারো পরিবার নিশ্চিহ্ন হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন ক্ষোভ জন্ম নিচ্ছে, আর সেই ক্ষোভই আবার সংঘাতকে টিকিয়ে রাখছে।
বিশ্বশক্তির ভণ্ডামি যুদ্ধকে আরও দীর্ঘ করছে। ইউক্রেন ইস্যুতে যারা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বুলি আওড়ায়, তারা গাজার প্রশ্নে নির্বিকার। ইসরায়েলের মিত্র রাষ্ট্রগুলো অস্ত্র আর সমর্থন দিয়ে এই হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিচ্ছে। তাদের দ্বৈত নীতি প্রমাণ করছে, মানবিকতার চেয়ে রাজনৈতিক স্বার্থই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে শান্তির কোনো আন্তরিক উদ্যোগ নেই, বরং যুদ্ধকে চালিয়ে যাওয়ার অঘোষিত প্রণোদনা আছে।
গাজায় এখন অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় চলছে। হাজারো প্রাণহানি, লক্ষাধিক গৃহহীন, শিশুদের কান্না—সবকিছু আন্তর্জাতিক মহলের সামনে স্পষ্ট। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো চিৎকার করছে, কিন্তু প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো বধির। মানবিকতার প্রতি এই অবহেলা যুদ্ধকে আরও দীর্ঘ করছে।
সবচেয়ে বড় সত্য হলো, গাজার সংকটের কোনো সামরিক সমাধান নেই। এটি রাজনৈতিক প্রশ্ন, রাষ্ট্রীয় প্রশ্ন, ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, দখলনীতি ও অবরোধের অবসান ছাড়া শান্তি আসবে না। কিন্তু সেই রাজনৈতিক ইচ্ছা নেই—না ইসরায়েলের, না তাদের মিত্রদের। তাই এই যুদ্ধও শেষ হওয়ার নয়।
গাজা–ইসরায়েল যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, অস্ত্র কখনো শান্তি আনে না। প্রতিশোধ নয়, দরকার ন্যায়। দখল নয়, দরকার সংলাপ। অবরোধ নয়, দরকার মানবিকতা। যতদিন এই সত্য বিশ্ব স্বীকার না করবে, ততদিন গাজার যুদ্ধ চলবে, আর মানবতার ইতিহাসে এটি লিপিবদ্ধ হবে এক কালো অধ্যায় হিসেবে।