শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

নিত্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, বাজারের দুষ্টচক্র ভাঙতেই হবে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১১:০৪ পিএম

নিত্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, বাজারের দুষ্টচক্র ভাঙতেই হবে

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হলো সরাসরি বেঁচে থাকার সঙ্গে জড়িত একটি অনিবার্য বাস্তবতা। বাজারের দাম সামান্য বাড়লেই সীমিত আয়ের মানুষদের হাঁসফাঁস শুরু হয়। আর তাই নিত্যপণ্যের দামে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কেবল অর্থনীতির সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক সংকট।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে চাল, ডিম, মুরগি, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে সবজি—সব কিছুর দাম বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা এর জন্য সরবরাহ ঘাটতি, বৃষ্টি কিংবা পরিবহন সমস্যাকে দায়ী করছেন। অথচ অনুসন্ধানী রিপোর্টগুলো বলছে—এমন কোনো প্রকৃত ঘাটতি নেই। অর্থাৎ, এখানে মূল ভূমিকা রাখছে বাজারের দুষ্টচক্র। বিশেষ করে খাতুনগঞ্জের মতো বড় আড়তগুলোতে কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মিলে দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ভোক্তাদের পকেট কেটে নিজেদের মুনাফা বাড়ানোর কাজে ব্যস্ত।

এই সুযোগসন্ধানী দুষ্টচক্রকে থামাতে না পারলে বাজারের অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে। সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে সরবরাহ পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া এবং প্রতারণামূলক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ এটি শুধু একটি অর্থনৈতিক বিষয় নয়, বরং জনগণের ন্যায্য অধিকার রক্ষার প্রশ্ন।

আজকের বাস্তবতায় দাম বাড়াকে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক মহলও পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। তারা জনগণের হতাশাকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। এতে সাধারণ মানুষ আরও বিভ্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু যে যাই বলুক, সত্য হলো—আসলে এখানে মূল সমস্যা বাজারের কৃত্রিম অস্থিরতা ও মুনাফাখোরদের দাপট।

এখনই সময় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। বাজার মনিটরিংয়ে কঠোরতা, পাইকারি ও খুচরা বাজারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধিকারীদের আইনের আওতায় আনা—এসব ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।

আমরা মনে করি, জনগণের কষ্টের বিনিময়ে কারও ব্যবসা সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। বাজারে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা এবং দুষ্টচক্র ভাঙা এখন সময়ের দাবি। নইলে অতীতের দুর্ভোগ ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, যা অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করবে এবং মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলবে।

মাতৃভূমির খবর

Link copied!