প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ১০:২১ পিএম
খুন হওয়ার বছর তিনেক আগে পূর্বাচলে যে তিন কাঠা জমি কিনেছিলেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি, ১৬ বছর পর সেটির দলিল বুঝে পেলেন তাদের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাগর-রুনির সন্তানের হাতে দলিল তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
উত্তরাধিকার সূত্রে এর মালিকানা রয়েছে সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মনির ও সাগরের ছেলে মেঘের নামে। মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ২০০৪ সালে পূর্বাচলের প্লটের জন্য আবেদন করে ২০০৫ সালে বরাদ্দ পান।
২০০৯ সালে জমির সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করেন। এর তিন বছর ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় সাগর ও তার স্ত্রী, এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি খুন হন।
জমি কেনার পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সেটি বুঝে পায়নি নিহত এ সাংবাদিক দম্পতির পরিবার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দলিল হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কেও খোঁজ নেন। আলোচিত এই মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, তদন্তে এ ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেছিলেন। ১৩ বছর পার হলেও সেটির তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।
ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ১২০ বার পিছিয়েছে। আদালত আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ঠিক করেছেন। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।
মামলাটি শুরুতে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় শেরেবাংলা নগর থানাকে। তিন দিন পর মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের রহস্য উন্মোচন করে তা জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে; কিন্তু এক যুগেও সে রহস্য উন্মোচন আলোর মুখ দেখেনি।
বৃহস্পতিবার সাগর-রুনির ছেলের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগে বহু আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে বর্তমান তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।” অনুষ্ঠানে মেঘ তার ডিজাইন করা একটি জার্সি ও ব্যাগ প্রধান উপদেষ্টাকে উপহার দেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলাম এবং মেহেরুন রুনির ভাই নওয়াজেশ আলম রোমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
