শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

পেঁপে খাওয়া যাদের জন্য বিপজ্জনক

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ০১:৩২ পিএম

পেঁপে খাওয়া যাদের জন্য বিপজ্জনক

নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর পেঁপে। ভিটামিন এ, সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর পেঁপেতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার। প্যাপাইন নামক উৎসেচক থাকায় পেঁপে খাবার হজম করতেও সাহায্য করে।

পেঁপের গুণের শেষ নেই বটে, তা সত্ত্বেও কারও কারও জন্য স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, ল্যাটেক্স অ্যালার্জি আছে এমন মানুষ, হাইপোথাইরয়েডিজম রোগী এবং যাদের কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি রয়েছে তাদের পেঁপে খাওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ (এনআইএইচ), সায়েন্স ডাইরেক্ট এবং ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, পেঁপে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি গ্রুপের জন্য মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। 

পেঁপে যাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নিচে তুলে ধরা হলো-

১. গর্ভবতী নারী: বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা বা আধাপাকা পেঁপে গর্ভবতী নারীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে থাকা ল্যাটেক্স ও পাপেইন গর্ভাশয়ে সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে সময়ের আগেই প্রসব হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। যদিও পুরোপুরি পাকা পেঁপে কিছুটা নিরাপদ ধরা হয়। তবু গর্ভাবস্থায় পেঁপে একেবারেই না খাওয়াই নিরাপদ।

২. হৃদস্পন্দনজনিত রোগীরা: পেঁপেতে থাকা কিছু সায়ানোজেনিক যৌগ শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে, যা স্বাভাবিক ব্যক্তিদের জন্য বড় সমস্যা না হলেও হৃদস্পন্দনের জটিলতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যারা হার্ট অ্যারিথমিয়া বা অনিয়মিত হার্টবিটের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৩. যাদের ল্যাটেক্স অ্যালার্জি রয়েছে: সায়েন্স ডাইরেক্টের গবেষণা অনুযায়ী, পেঁপেতে থাকা চিটিনেজ প্রোটিন ল্যাটেক্স অ্যালার্জির রোগীদের শরীরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে হাঁচি, চুলকানি, এমনকি শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে। যাদের ল্যাটেক্সে অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের একেবারেই পেঁপে খাওয়া এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

৪. হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্তরা: পেঁপের কিছু উপাদান থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে আরও ধীর করে তুলতে পারে। ফলে ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, ঠাণ্ডা লাগা ইত্যাদি উপসর্গ বাড়তে পারে। তাই এই রোগীরা পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. কিডনিতে পাথর: পেঁপেতে ভিটামিন সি’র মাত্রা অনেক বেশি। শরীরে এটি ‘অক্সালেট’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়, যা ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন’ তৈরি করতে পারে। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন জানায়, অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ কিডনির পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়। যাদের আগে কখনো কিডনিতে পাথর হয়েছে বা ঝুঁকি রয়েছে, তাদের পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধ জরুরি।

পেঁপে যতই পুষ্টিকর হোক না কেন, সব খাবারের মতো এটিও সবার জন্য উপকারী নয়। যেকোনো সন্দেহে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ পথ। সূত্র: আনন্দবাজার।

মাতৃভূমির খবর

Link copied!