প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০১:৩০ পিএম
চাকরির আবেদন মানেই শুধু ডিগ্রি হাতে নিয়ে বাজারে নামা নয়। বরং শিক্ষাজীবনেই শুরু হয় প্রস্তুতি। আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে একটি শক্তিশালী সিভি (CV), প্রফেশনাল কভার লেটার এবং কার্যকরী লিঙ্কডইন প্রোফাইল—এই তিনটি হাতিয়ার শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার যাত্রাকে অনেক সহজ করে তুলতে পারে।
সিভি (Curriculum Vitae): প্রথম পরিচয়ের দরজা
সিভি হলো আপনার পেশাগত জীবনের সারসংক্ষেপ। ভালো সিভি নিয়োগকর্তার কাছে প্রথম ইমপ্রেশন তৈরি করে।
- কী লিখবেন: শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপ, দক্ষতা ও অর্জন।
- ভাষা ও গঠন: সংক্ষিপ্ত, সুসংগঠিত ও নির্ভুল ভাষা ব্যবহার করুন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য এড়িয়ে চলুন।
- টিপস: শিক্ষাজীবনে অংশ নেওয়া ক্লাব, প্রতিযোগিতা বা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজও সিভিতে যুক্ত করা যায়। এগুলো আপনার নেতৃত্ব, টিমওয়ার্ক ও দায়িত্ববোধের প্রমাণ দেয়।
শিক্ষাজীবনেই সিভি তৈরির অভ্যাস করলে পরবর্তীতে তা সহজেই আপডেট করা যায়।
কভার লেটার: চাকরির আবেদনের ব্যক্তিগত বার্তা
সিভি যেমন আপনার প্রোফাইল, কভার লেটার হলো আপনার উদ্দেশ্য ও আগ্রহের প্রতিফলন।
- ব্যক্তিগতকরণ জরুরি: প্রতিটি চাকরির জন্য আলাদা কভার লেটার লিখুন।
- কী লিখবেন: কেন ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান, কীভাবে আপনার দক্ষতা তাদের জন্য উপকারী হবে।
- টিপস: অতিরিক্ত বড় নয়, ৩–৪ অনুচ্ছেদ যথেষ্ট। ভদ্র, প্রফেশনাল ও আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গি বজায় রাখুন।
শিক্ষাজীবনেই ইন্টার্নশিপ বা স্বেচ্ছাসেবী কাজে আবেদন করার সময় কভার লেটার চর্চা শুরু করলে ভবিষ্যতে চাকরির আবেদনে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।
লিঙ্কডইন প্রোফাইল: ডিজিটাল যুগের পেশাগত পরিচয়
আজকের দিনে শুধু সিভি যথেষ্ট নয়। লিঙ্কডইন হলো একটি গ্লোবাল প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নিয়োগকর্তারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের খুঁজে পান।
- প্রোফাইল ছবি: প্রফেশনাল ও পরিষ্কার ছবি ব্যবহার করুন।
- হেডলাইন ও সারাংশ: আপনার পড়াশোনা, দক্ষতা ও আগ্রহ কয়েকটি লাইনে লিখুন।
- অভিজ্ঞতা ও অর্জন: স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, প্রজেক্ট, প্রতিযোগিতা সবকিছু যুক্ত করুন।
- নেটওয়ার্ক তৈরি: শিক্ষাজীবন থেকেই শিক্ষক, সিনিয়র ও সহপাঠীদের যুক্ত করুন।
- কনটেন্ট শেয়ারিং: নিজের শেখা, অভিজ্ঞতা ও আগ্রহ শেয়ার করলে প্রোফাইল আরও সক্রিয় হয়।
বাংলাদেশের অনেক তরুণ শিক্ষার্থী স্নাতক শেষে লিঙ্কডইনে সক্রিয় হয়, কিন্তু তখনই সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। আগে থেকে শুরু করলে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক তৈরি সহজ হয়।
কেন শিক্ষাজীবনেই শুরু জরুরি?
- ইন্টার্নশিপ বা পার্টটাইম চাকরির সুযোগ পেতে।
- আত্মবিশ্বাস বাড়াতে।
- চাকরির বাজার সম্পর্কে আগেভাগেই ধারণা পেতে।
- ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে।
একটি শক্তিশালী সিভি, প্রফেশনাল কভার লেটার এবং কার্যকরী লিঙ্কডইন প্রোফাইল হলো আজকের যুগে ক্যারিয়ার প্রস্তুতির মূল হাতিয়ার। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই এগুলো তৈরি করলে ভবিষ্যতের পথ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
চাকরির বাজারে সফল হতে হলে এখন থেকেই নিজের প্রোফাইল গড়ে তোলা শুরু করা উচিত—কারণ প্রথম ইমপ্রেশনই অনেক সময় শেষ ইমপ্রেশন হয়ে যায়।