শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

ক্যারিয়ার প্রস্তুতিতে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের গুরুত্ব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০১:১২ পিএম

ক্যারিয়ার প্রস্তুতিতে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের গুরুত্ব

ছবি: মাতৃভূমির খবর ডিজিটাল

শিক্ষাজীবনের মূল লক্ষ্য শুধু ভালো ফল করা বা একটি ডিগ্রি অর্জন নয়, বরং ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। এই প্রস্তুতির অন্যতম কার্যকর মাধ্যম হলো স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। সমাজসেবা, রক্তদান কর্মসূচি, দুর্যোগকালীন সহায়তা, শিক্ষাদান বা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কাজ—এসব অভিজ্ঞতা একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার গঠনে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।

কেন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ গুরুত্বপূর্ণ?

১. দক্ষতা উন্নয়ন
স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে কাজ করা, নেতৃত্ব, সময় ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধান—এসব বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করে, যা ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে অমূল্য।

২. নেটওয়ার্ক তৈরি
বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিক্ষক, উদ্যোক্তা বা পেশাজীবীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতের চাকরির সুযোগ তৈরি করতে সহায়ক হয়।

৩. রেজুমে শক্তিশালী করা
চাকরির জন্য আবেদন করার সময় নিয়োগকর্তারা এখন শুধু একাডেমিক ফলাফলের দিকে তাকান না। তারা দেখতে চান প্রার্থী বাস্তবে কতটা দক্ষ ও দায়িত্বশীল। স্বেচ্ছাসেবামূলক অভিজ্ঞতা সেই যোগ্যতার প্রমাণ দেয়।

৪. সামাজিক দায়বদ্ধতা
স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ শিক্ষার্থীদের সমাজের সমস্যাগুলো বুঝতে সাহায্য করে। এতে তাদের মধ্যে সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতা বাড়ে, যা একজন সফল পেশাজীবীর গুরুত্বপূর্ণ গুণ।

 ক্যারিয়ারের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবার সম্পর্ক

  • চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাত: মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যদি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে কাজ করে, তবে তাদের ব্যবহারিক দক্ষতা বাড়ে।
  • শিক্ষা খাত: যারা শিক্ষকতা বা শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ক্যারিয়ার গড়তে চায়, তারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়িয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
  • ব্যবসা ও ম্যানেজমেন্ট: সংগঠন পরিচালনা, ফান্ড রেইজিং বা ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা দক্ষতা তৈরি হয়।
  • আইটি ও প্রযুক্তি: টেক-ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কাজ করলে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল স্কিল শানিত হয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশে হাজারো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলা, রক্তদান, শিক্ষাসেবা, পরিবেশ রক্ষা—সবখানেই তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে এখনো অনেক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবাকে ক্যারিয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখে না।

  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজকে ক্রেডিট আওয়ারে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
  • সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন করার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই স্বেচ্ছাসেবার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের শুধু দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে না, বরং তাদের সমাজের জন্য দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও গড়ে তোলে।

ক্যারিয়ার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ কোনো অতিরিক্ত কর্মকাণ্ড নয়, বরং ভবিষ্যতের চাকরি ও জীবনের জন্য অপরিহার্য এক বিনিয়োগ।

 

মাতৃভূমির খবর

Link copied!