শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

জাতীয় শিক্ষা বাজেট: বিনিয়োগ বাড়ছে, নাকি কেবল সংখ্যার খেলা?

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ১১:৪৫ এএম

জাতীয় শিক্ষা বাজেট: বিনিয়োগ বাড়ছে, নাকি কেবল সংখ্যার খেলা?

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ প্রতি বছরই বাজেট বক্তৃতায় অন্যতম আলোচ্য বিষয়। সরকার দাবি করে, শিক্ষায় বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষাবিদদের প্রশ্ন—এই বাড়তি বাজেট আসলেই কি কার্যকর বিনিয়োগ হচ্ছে, নাকি কেবল সংখ্যার খেলা?

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের জিডিপির অন্তত ৪% থেকে ৬% শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ব্যয় এখনো ২%–এর কাছাকাছি। ফলে শিক্ষার প্রসারে ঘোষণার চেয়ে বাস্তবায়ন অনেক কম।

অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিমত, বাজেট বাড়লেও তা মাঠপর্যায়ে যথাযথভাবে কাজে লাগছে না। অনেক স্কুলে এখনো পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, আধুনিক ল্যাবরেটরি, প্রশিক্ষিত শিক্ষক বা ডিজিটাল সুবিধা নেই। বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ হচ্ছে অবকাঠামো সংস্কার ও প্রশাসনিক খাতে, অথচ মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য প্রয়োজন ছিল গবেষণা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি শিক্ষায় বিনিয়োগ।

গ্রামীণ ও প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাজেট ঘাটতিতে। শহরের কিছু উন্নত বিদ্যালয়ে আধুনিক সুবিধা থাকলেও প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার মান এখনো পিছিয়ে। এর ফলে শহর-গ্রামের বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃত বিনিয়োগ মানে কেবল অর্থ বরাদ্দ নয়, বরং অর্থের সঠিক ব্যবহার। নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন, কারিগরি শিক্ষা প্রসার, এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যয় জরুরি। অন্যথায় বাড়তি বাজেট ঘোষণার পরও শিক্ষার মানোন্নয়ন দৃশ্যমান হবে না।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, জাতীয় শিক্ষা বাজেটকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনের জন্য কৌশলগতভাবে কাজে লাগানো দরকার। অন্যথায় প্রশ্ন থেকেই যাবে—বিনিয়োগ আসলেই বাড়ছে, নাকি কেবল কাগজে-কলমে সংখ্যার খেলা চলছে?


 

মাতৃভূমির খবর

Link copied!