প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে ক্যারিয়ার সচেতনতা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শুরু করলে যথেষ্ট নয়। শিশুদের ছোটবেলা থেকেই সচেতনভাবে বিভিন্ন পেশা ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচিত করানো দরকার। এতে তাদের আগ্রহ, প্রতিভা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গড়ে ওঠে সুসংহতভাবে।
ছোটদের জন্য ক্যারিয়ার সচেতনতা কেন জরুরি
-
স্বপ্ন বেছে নেওয়ার সুযোগ: ছোটরা যখন বিভিন্ন পেশার গল্প, অভিজ্ঞতা ও বাস্তব উদাহরণ শোনে, তখন তারা নিজের স্বপ্ন তৈরি করতে শেখে।
-
দক্ষতার ভিত্তি গড়ে ওঠা: প্রাথমিক পর্যায়েই গণিত, ভাষা, প্রযুক্তি, শিল্পকলা বা খেলাধুলার প্রতি ঝোঁক তৈরি হলে পরবর্তীতে তা দক্ষতায় রূপ নেয়।
-
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: নিজের সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা থাকলে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী হয় এবং পড়াশোনাতেও অনুপ্রাণিত থাকে।
স্কুল পর্যায়ে করণীয়
১. ক্যারিয়ার ডে আয়োজন
বছরে অন্তত একবার বিভিন্ন পেশার মানুষকে (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, সাংবাদিক, উদ্যোক্তা, শিল্পী ইত্যাদি) স্কুলে আমন্ত্রণ জানিয়ে শিশুদের সামনে অভিজ্ঞতা শেয়ার করানো যেতে পারে।
২. স্টোরি টেলিং ও রোল মডেল উপস্থাপন
ছোটদের বয়স অনুযায়ী সহজ ভাষায় সফল মানুষের জীবনকাহিনি জানানো। যেমন—বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার, জাতীয় নেতাদের সংগ্রাম, শিল্পীদের অনুপ্রেরণামূলক গল্প।
৩. প্র্যাকটিক্যাল কার্যক্রম
-
“মিনি মার্কেট ডে” আয়োজন করে শিশুদের ছোট উদ্যোক্তার ভূমিকা পালন করানো।
-
“সায়েন্স ফেয়ার” বা “আর্ট এক্সিবিশন” এর মাধ্যমে সৃজনশীলতা বাড়ানো।
-
শিশুদের দলভিত্তিক প্রেজেন্টেশন বা অভিনয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানো।
৪. ক্যারিয়ার কর্নার তৈরি
স্কুল লাইব্রেরি বা একটি নির্দিষ্ট স্থানে শিশুদের জন্য সহজবোধ্য বই, ছবি, ভিডিও রাখা, যেখানে বিভিন্ন পেশার পরিচিতি থাকবে।
৫. দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা
প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু বই নয়, প্রযুক্তি ব্যবহার, কোডিং গেম, হস্তশিল্প, গল্প বলা, দলগত কাজ শেখানো উচিত। এগুলোই ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার ভিত্তি তৈরি করে।
অভিভাবকের ভূমিকা
-
শিশুদের প্রশ্নের উত্তর ধৈর্যের সঙ্গে দেওয়া।
-
তাদের ছোট ছোট সাফল্যে উৎসাহ দেওয়া।
-
পড়াশোনার বাইরে খেলাধুলা, ছবি আঁকা, গান কিংবা অন্য শখকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া।
শিশুদের ক্যারিয়ার সচেতন করে তোলা মানে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা নয়; বরং তাদের স্বপ্ন দেখতে শেখানো। ছোটবেলা থেকেই যদি তারা বুঝতে শেখে “আমি কী হতে চাই” এবং “আমার কী শেখা দরকার”, তবে ভবিষ্যতের পথচলা হবে অনেক বেশি স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসী।