রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এমপিরা ভোট দেবেন গোপন ব্যালটে : সালাহউদ্দিন
আপলোড সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৪:৩৬:২৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৪:৩৬:২৬ অপরাহ্ন
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উভয়পক্ষের এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দেবেন— ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি এমন প্রস্তাব করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা যে সংস্কার প্রস্তাব করেছি তাতে সব দল একমত হয়েছে। আমরা আরেকটি প্রস্তাব করেছি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উভয়পক্ষের এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দেবেন। সেটা আরেকটা বিপ্লব হবে। আর প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর করার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি, এটাও বড় ধরনের অর্জন। আমরা যদি প্রতিক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগকে সীমাবদ্ধ করি আইনিভাবে ও সাংবিধানিকভাবে, তাহলে কিন্তু নির্বাহী বিভাগ দুর্বল হবে। তখন রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক ঐক্যর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকতে হবে। সেজন্যই আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। স্বচ্ছ নিরপেক্ষ এবং নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যদি সত্যিকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে, তাহলে কিন্তু স্বৈরাচারের উৎপত্তিটা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী দাঁড় করানো যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগকে খর্ব করার মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো দাঁড় করানো যাবে না। নির্বাহী বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে। বিচার বিভাগ ও আইন সভাকে তার কাজ করতে দিতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সব গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে একটা শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো প্রয়োজন, যাতে তারা নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। তাহলে এদেশে আর কোনোদিন স্বৈরাচারের উৎপত্তি হবে না।
সব রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনারা কেউ চাইবেন কল্যাণমূলক রাষ্ট্র, আরেকজন চাইবেন অকল্যাণমূলক রাষ্ট্র– এগুলো যেন না হয়। সবার মধ্যে যেন একটা কমন আদর্শ থাকে যে আমরা সবাই জনগণের মুক্তি চাই। বৈষম্যহীন সাম্যভিত্তিক মানবিক মর্যাদা ভিত্তিক সামাজিক সুবিচারের রাষ্ট্র চাই। এখানে যেন আমরা সবাই কার্যত এক হতে পারি। ভাষণের মধ্যে নয়। কারণ এই দেশে আমরা ভাষণ অনেক দিয়েছি। এখন আমরা এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়েছি যেই জায়গায় শহীদের রক্ত। পিচ্ছিল রাজপথের ওপরে তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল অনেক, প্রত্যাশা ছিল অনেক। সে আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশা যেন আমরা পূর্ণ করতে পারি।
তিনি বলেন, আপনারা এখানে সংস্কার নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু হতাশা কেউ ব্যক্ত করেন নাই। কারণ আমরা সবাই আশাবাদী মানুষ। আলাপ আলোচনা চলছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমরা একটা জায়গায় ঐক্যতে আসতে পারব। আমরা ঐক্যে আসার জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে কি কি বিবেচনা নিয়েছি জাতীয় স্বার্থ আপনারা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছেন। আমরা বলেছি ১০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীত্বের আসনে বসতে পারবেন না। এখানেই স্বৈরাচারকে রুখে দেওয়া হলো।
আলোচনা সভায় এর আগে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনকে দাপট মুক্ত করতে হলে ধর্মের অপব্যবহার, প্রশাসনের দলীয়করণ করা বন্ধ করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য কী, তাদের মনে কী আছে? গত ১৬ বছর দেশের জনগণ ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেছে। কেউ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেনি। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে গেলে অন্তত এক থেকে দুই বছর সময় লাগবে। তাই এসব খেলা বন্ধ করেন। দড়ি নিয়ে বেশি টানাটানি না করি। কারণ বেশি টানাটানি করলে দড়ি ছিড়ে যাবে।
নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- ১২ দলীয় জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্য সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স