ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ , ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

কিয়ামতের দিনে আল্লাহ যাদের দিকে তাকাবেন না

আপলোড সময় : ১৮-০৬-২০২৫ ১২:৫৬:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৮-০৬-২০২৫ ১২:৫৬:১৬ অপরাহ্ন
কিয়ামতের দিনে আল্লাহ যাদের দিকে তাকাবেন না
পরকালে সফলতা অর্জনের জন্য মহান আল্লাহর হুকুম অনুসরণ করা যেমন জরুরি, তেমনি রাসুল (সা.) এর আদর্শ ও তার দেখানো পথও অনুসরণ করা আবশ্যক।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে নবী! আপনি তাদের বলে দিন—যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সুরা আল-ইমরান, আয়াত: ৩১)।

তাই মনে রাখতে হবে, এই পৃথিবী মুমিনের জন্য একটি পরীক্ষার ক্ষেত্র। পরকালে সফল হতে হলে অবশ্যই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘যমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি—আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৭)।

এ ক্ষেত্রে বিপদ-আপদের মাধ্যমেও মহান রাব্বুল আলামিন বান্দার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। সুতরাং, বিপদ-আপদের সময়ে ভেঙে পড়লে চলবে না। ধৈর্য ধারণের পাশাপাশি মহান রবের হুকুম ও রাসুল (সা.) এর দেখানো পথ অনুসরণ করতে হবে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যখন তার কোনো বান্দার কল্যাণ করতে চান, তখন তাকে দুনিয়াতে বিপদে নিক্ষেপ করেন। আর যখন তিনি তার কোনো বান্দার অকল্যাণ সাধন করতে চান, তখন তাকে তার অপরাধের শাস্তি থেকে বিরত রাখেন। এরপর কিয়ামতের দিন তাকে সম্পূর্ণ শাস্তি দেন’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৩৯৬)।

পরকালে সফলতার জন্য নবীজি বিভিন্ন হাদিসে উম্মতদের নানা বিষয়ে আদেশ-নিষেধ দিয়েছেন এবং মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের পথও বাতলে দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হাদিসে তিন শ্রেণির মানুষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের দিকে কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তা’আলা দৃষ্টিপাত করবেন না।

আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন ৩ শ্রেণির মানুষের প্রতি আল্লাহ তা’আলা দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসল (সা.) বলেছেন- কিয়ামতের দিন ৩ শ্রেণির মানুষের প্রতি আল্লাহ তা’আলা দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এর মধ্যে এক শ্রেণির মানুষ হলো- যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি আছে, অথচ সে মুসাফিরকে তা দিতে অস্বীকার করে।

অপর শ্রেণির মানুষ হলো সেই ব্যক্তি যে ইমামের হাতে একমাত্র দুনিয়ার স্বার্থে বায়াত গ্রহণ করে। যদি ইমাম তাকে কিছু দুনিয়াবি সুযোগ দেন, তাহলে সে খুশি হয়। আর যদি না দেন তবে সে অসন্তুষ্ট হয়।

এছাড়া তৃতীয় শ্রেণির মানুষ হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি আসরের সালাত (নামাজ) আদায়ের পর তার জিনিসপত্র (বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে) তুলে ধরে আর বলে যে, আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, আমার এই দ্রব্যের মূল্য এত এত দিতে আগ্রহ করা হয়েছে। (কিন্তু আমি বিক্রি করিনি) এতে এক ব্যক্তি তাকে বিশ্বাস করে (তা ক্রয় করে নেয়)। এরপর রাসুল (সা.) পবিত্র কুরআনে বর্ণিত একটি আয়াত তিলাওয়াত করেন যেখানে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২২০৩)

পবিত্র কোরআনের তৃতীয় সুরা ইমরানের সেই আয়াতটি হলো, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার ও নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে, তারা আখিরাতের কোনো অংশই পাবে না। এবং আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না, বরং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’ (সুরা ইমরান, আয়াত: ৭৭)।

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ