খাবারের অভাবে গাজায় চার বছরের শিশুর মৃত্যু
আপলোড সময় :
২৫-০৫-২০২৫ ০৫:২৪:৫৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৫-০৫-২০২৫ ০৫:২৪:৫৮ অপরাহ্ন
আমরা প্রতিনিয়ত কত খাবার নষ্ট করছি। অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ায় অনেক খাবার পেটে না দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছি। অথচ এই পৃথিবীরই এক প্রান্তে খাবার না পেয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। অবশ্য তা কোনো প্রাকৃতিক সংকটের কারণে নয়, বরং মানুষেরই তৈরি করা সংকটের কারণে। তেমনই একটি জায়গা- ফিলিস্তিনের গাজা।
দীর্ঘদিন দরে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। বর্বর হামলায় প্রতিদিন অসহায় মানুষদের হত্যা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সেখানে আবার খাবারের সংকটেও মারা যাচ্ছেন অনেকে। তেমনি অনাহারে ভুগে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে গাজায়। তার নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল আরোপিত অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি ও মানবিক সহায়তা গাজার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষুধার কারণে চার বছরের এক শিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত বুধবার থেকে গাজায় মাত্র ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে দিয়েছে ইসরায়েল। যা ভূখণ্ডটির ২০ লাখ মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণের কাছাকাছিও নয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজার ৭০ হাজারের বেশি শিশু চরম অপুষ্টির সম্মুখীন।
গাজার চিকিৎসক ইজ্জেদিন শাহিন বলেন, এখন উপত্যকাটির সুস্থ শিশুদের ওপরও খাদ্যাভাবের প্রভাব পড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর প্রবণতা এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা বা বিশেষ যত্ন প্রয়োজন এমন শিশুদের ক্ষেত্রে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর ঘটনা দেখা যেত। তবে এখন এমন শিশুদের ওপরও দুর্ভিক্ষের প্রভাব পড়ছে, যারা আগে প্রায় সুস্থই ছিল- অপুষ্টি ছাড়া যাদের কোনো পূর্ববর্তী শারীরিক সমস্যা ছিল না।’
এদিকে, গত শুক্রবার ইসরায়েলের এক হামলায় গাজার খান ইউনিসের একটি পরিবারের একই সঙ্গে নয় ভাইবোনের মৃত্যু হয়েছে। ওই হামলায় চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির বয়স ১২ বছর এবং ছোটটির বয়স মাত্র ছয় মাস ছিল।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার খান ইউনিসে এক হামলায় নারী চিকিৎসকের ৯ সন্তান নিহত হওয়ার ঘটনাটি নিয়ে তারা পর্যালোচনা করছে।
গাজার কর্মকর্তারা বলছেন, নিরপরাধ শিশুদের হত্যা এখন ইসরায়েলি সেনাদের জন্য যেন একটি বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৯০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন। আর গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ হিসাবের ক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ থাকা মানুষদের মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স